আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একটানা কত দিন স্নান না করে থাকতে পারবেন? এক-দু’দিন বা নিদেন পক্ষে তিন-চার দিন! উত্তরটা ‘হ্যাঁ’ হলে ইরানের এক বৃদ্ধের কাছে একদমই হেরে গেলেন আপনি। ইরানের এই বৃদ্ধ নাকি টানা ৬৭ বছর ধরে গোসল করেননি। দেশটির সংবাদমাধ্যমে তার এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এই বৃদ্ধই দুনিয়ার সবচেয়ে ‘নোংরা, অপরিষ্কার’ ব্যক্তি?
‘তেহরান টাইমস’ নামে ইরানের একটি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, কেরমানশাহ প্রদেশের দেজগাহ গ্রামের বাসিন্দা আমো হাজি প্রায় সাত দশক ধরে গোসল করেননি। দিব্যি বেশ ভালো রয়েছেন বৃদ্ধ! তবে গায়েমাথায় নিয়মিত সাবান-শ্যাম্পুর ঘষামাজা না হওয়ায় একটু অন্য রকমের ‘রূপ’ হয়েছে তার।
তার ‘রূপ’ দেখে অনেকেই বলছেন, বৃদ্ধ যেন বাইবেলের পাতা থেকে উঠে আসা চরিত্রের মতো দেখতে হয়ে গিয়েছেন। ঠিক যেন রান্নাঘরের চিমনি বেয়ে নেমে আসা মোজেস। তেমনই গোঁফদাড়িতে ঢাকা গোটা মুখ। অর্ধেক টাকমাথায় উস্কোখুস্কো চুল। গায়েমাথায় ছাইমাখা, নোংরা!
কেন গোসল করেন না এমন প্রশ্নের জবাবে ৮৭ বছরের আমো হাজি বলেন, ‘‘পানি দেখলে ভয় হয়। মনে হয় গোসল করলেই অসুস্থ হয়ে পড়ব!’’ তিনি জানান, গোঁফদাড়ি বড় হলে নাপিতের কাছে দৌড়ন না । বরং আগুন জ্বালিয়ে তাতে মুখটা এগিয়ে দেন। গোঁফদাড়ি আপনা থেকেই ‘ট্রিম’ হয়ে যায়।
গোসল না করা বা অপরিচ্ছন্ন থাকা ছাড়াও তার খাদ্যাভ্যাসও বেশ ‘উদ্ভট’। তার খাবারদাবারে হামেশাই মৃত পশুপ্রাণীর পচা মাংস থাকে। বিশেষ করে সজারুর মাংস বেশ জমিয়ে খান তিনি। আর নেশা বলতে ধূমপান। তবে তামাক খেতে একেবারেই পচ্ছন্দ করেন না। বরং পশুর মল শুকিয়ে ফুটিফাটা পাইপে ঢুকিয়ে তাতে সুখটান দেন আমো হাজি । মরচেধরা টিনের ক্যান থেকে প্রতি দিন পাঁচ লিটার জল ঢক ঢক করে গিলে ফেলেন তিনি।
সাজপোশাকেও সতন্ত্র হাজি। যেন যুদ্ধে যাচ্ছেন, এমন হেলমেট মাথায়। তবে যুদ্ধে নয়, ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতেই এমন সাজ। সাজপোশাক বা খাবারদাবারের মতোই হাজির থাকার জায়গাও কম অভিনব নয়। যেন কবরখানায় ঢুকছেন, এমন গর্তে থাকেন তিনি। বসবাসের আরও একটা জায়গা রয়েছে তাঁর। বৃদ্ধের থাকার জন্য ইটের সারি দিয়ে খোলা ছাউনি গড়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীর দাবি, যৌবনে মনে ব্যথা পাওয়ার পর থেকেই জনশূন্য জায়গায় বসবাস শুরু করেন তিনি। নিজের যাপনও বদলে ফেলেন বৃদ্ধ!